সিলেটের কথা ::: সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান পারস্পরিক একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই পদক্ষেপ কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে চুক্তিটি বিশেষ গুরুত্বও পাচ্ছে।
১৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, সৌদি আরবের সাথে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছে। এখন থেকে সৌদি আরব বা পাকিস্তান আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশ নিজেদের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে। দুই দেশ এক সঙ্গে হামলার জবাব দেবে। আলহামদুলিল্লাহ!
তিনি আরও বলেন, আসলে এমন চুক্তি ছাড়া মুসলিম দেশগুলোর আর কোনো উপায় নেই।
এদিকে, এমন এক সময়ে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা হলো, যখন উপসাগরীয় আরব দেশগুলো তাদের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা রক্ষাকারী যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান। গত সপ্তাহে কাতারে ইসরায়েলের হামলা এ উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা বলেছেন, এই চুক্তি বছরের পর বছর ধরে চলা আলোচনার ফল। এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার একটি পদক্ষেপ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, চুক্তিটি মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূরাজনীতিতে কৌশলগত সমীকরণ বদলে দিতে পারে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি উভয় দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার যৌথ প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এটি দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ সক্ষমতা শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়েছে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, যেকোনো একটি দেশের ওপর হামলা অন্য দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে।
সৌদি এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্বীকার করেন, পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ও আরেক পারমাণবিক শক্তি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্যও রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সবচেয়ে শক্তিশালী। আমরা এই সম্পর্ক আরও বাড়াতে চাই এবং যেকোনোভাবে আঞ্চলিক শান্তিতে অবদান রাখতে চাই।
পাকিস্তান কি সৌদি আরবকে পারমাণবিক নিরাপত্তা (নিউক্লিয়ার আমব্রেলা) দেবে— এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত করে।
Leave a Reply