সিলেটের কথা ডেস্ক :: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রের অব্যবস্থা ও জরুরি সেবায় ব্যর্থতার প্রতিবাদে ‘মেডিকেল ঘেরাও’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২২ জুন) রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা দেন এবং জরুরি সেবা ছাড়া সকল চিকিৎসাসেবা বন্ধ ঘোষণা করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নৃবিজ্ঞান ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়েরকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানে গাফিলতির সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে অপসারণ, অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, অভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারী বৃদ্ধি করা, পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জাম বৃদ্ধি করা এবং ২৪ ঘণ্টা প্যাথলজিক্যাল স্যাম্পল সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে, জরুরি বিভাগের সেবার মান নিশ্চিত করা, মেডিকেল সেন্টারকে একটি পরিপূর্ণ মেডিকেলে রূপান্তর করা এবং স্বাস্থ্যবীমা নিশ্চিত করা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সিয়াম কায়েফ বলেন, ‘আমরা সবাই দেখেছি, গতকাল নৃবিজ্ঞান বিভাগের জুবায়ের ভাই কীভাবে ঢাকা মেডিকেলের করিডোরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাতরাচ্ছেন, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও কোনো সহায়তা পাননি। মেডিক্যাল সেন্টারের এমন অপারগতা ভবিষ্যতে আমাদের আরও বড় ধরনের সমস্যার মুখে ফেলতে পারে। চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার, আর সেই চিকিৎসাসেবা দিতে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা এই অব্যবস্থার দ্রুত সমাধান চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। মেডিকেলে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার মতো জনবল নেই; এমনকি ইসিজি মেশিন থাকলেও তা চালানোর মতো প্রশিক্ষিত জনবলও নেই। বছরের পর বছর মেডিক্যাল সেন্টার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চললেও প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে তাতে কোনো ফল আসে না। তাই আমরা অতিদ্রুত মেডিক্যাল সেন্টারের কার্যকর সংস্কার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল ইসলাম বলেন, “এই মেডিকেল সেন্টারে একজন রোগী পর্যন্ত জরুরি সেবা পান না। কেউ অসুস্থ হয়ে এলেই তাকে সরাসরি বেসরকারি হাসপাতাল এনামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কখনও কখনও এর পেছনে কোনো ধরনের স্বার্থসংশ্লিষ্টটা আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সার্বিকভাবে এটি যেন ‘নাপা সেন্টার’ ছাড়া আর কিছু নয়।”
উল্লেখ্য, চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসাইন মৃত্যুবরণ করেছেন। রোববার সকালে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মৃত্যুর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স তিনি যথাসময়ে পাননি এমন অভিযোগ তুলে চিকিৎসাকেন্দ্র ঘেরাও করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
Leave a Reply