1. admin@sylheterkotha.com : admin :
August 7, 2025, 12:47 am
Title :
সড়কেই ঝরে গেল স্নেহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন সিলেটে জুলাই শহীদদের স্মরণে গ্রীন ডিসএ্যাবল্ড ফাউন্ডেশনের দোয়া মাহফিল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন সিলেট জেলার মাসিক সভা বিএনপি নেতাকর্মীরা সাধারণ ছাত্রজনতার পরিচয়ে মিশে স্বৈরাচারকে পালাতে বাধ্য করেছিল : সিলেটে মঈন খান নিরন্ন মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন সিলেট রক্তের অনুসন্ধানে আমরা সংগঠন অংশগ্রহণমূলক আইডিয়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণ সরকারি মদন মোহন কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডাচ দূতের সাক্ষাৎ, অভ্যুত্থান নিয়ে গান উপহার সিলেট নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কাজ করবে ইকো সলিউশন-চুক্তি স্বাক্ষর গোয়াইনঘাটে ইমাম উদ্দিন হত্যায় ৯ আসামি আটক

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের নায়কেরা-‘ছাত্র আন্দোলনে গিয়েছিল, আর ফিরল না। ‘গুলিবর্ষণে ভাই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান আয়াতুল্লাহ

  • Update Time : Tuesday, August 5, 2025
  • 4 Time View

মধ্যনগর:গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের খবরে আয়াতুল্লাহ তার ভাইয়ের সঙ্গে আনন্দ মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি গাজীপুরের মৌচাক এলাকা থেকে সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমির দিকে অগ্রসর হলে একাডেমির ভেতর থেকে আনসার বাহিনী গুলি চালায়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। গুলির মাঝখানে ভাই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান আয়াতুল্লাহ। পরে তাঁর ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন থেকে শুরু হয় পরিবারের মরিয়া খোঁজ। আয়াতুল্লাহর পিতা ও ভাই ছুটে বেড়ান এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে। কখনো কুমুদিনী হাসপাতাল, কখনো ঢাকা মেডিকেল, কখনো কাশিমপুর কারাগার পর্যন্ত। কোথাও খোঁজ মেলে না। পরিবার ধারণা করে—আয়াতুল্লাহর মৃতদেহ হয়তো অন্য লাশের সঙ্গে গুম করে ফেলা হয়েছে।

শহীদ আয়াতুল্লাহ সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার জলুসা গ্রামের বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম ও গৃহিণী শুভা আক্তারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। ২০০৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম। পড়ালেখার পাশাপাশি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। থাকতেন বড় ভাই সোহাগ মিয়ার সঙ্গে, কালিয়াকৈরের জামতলা এলাকায়।

একদিন বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে আয়াতুল্লাহর ছবি দেখে চমকে ওঠে পরিবার। এরপর ১১ দিন পর ১৬ আগস্ট রাতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পরদিন, ১৭ আগস্ট বিকেলে সমন্বয়কারীদের সহায়তায় পরিবার লাশ গ্রহণ করে।
সেদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে মধ্যনগর বাজার সংলগ্ন উব্দাখালী নদীর পাশে নির্মাণাধীন সেতুর ওপর জানাজা শেষে রাত আড়াইটায় শহীদ আয়াতুল্লাহকে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আয়াতুল্লাহর বড় ভাই সোহাগ মিয়া বলেন, ‘ও প্রায় প্রতিদিন ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিত। আন্দোলনে চলাকালে অনেক গুলিবিদ্ধ ছাত্রকে আমি রিকশায় হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ‘

শহীদ আয়াতুল্লাহর বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেকে আলেম বানাতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। কিন্তু সে দেশের জন্য শহীদ হয়ে গেছে—এটাই এখন গর্ব। আমি চাই, আয়াতুল্লাহসহ যারা শহীদ হয়েছে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের স্বীকৃতি দেওয়া হোক। হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’

আয়াতুল্লাহর শোক এখনো ভুলতে পারেনি তাঁর পরিবার। বিশেষ করে মা শুভা আক্তার—আজও যিনি ছেলের কথা উঠলেই ভেঙে পড়েন। প্রতিবেশীদের সান্ত্বনা, আত্মীয়দের সোহাগ—কোনো কিছুই কমাতে পারছে না তাঁর বুকফাটা আহাজারি।
কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সবার ছোট ছিল আমার আয়াতুল্লাহ। ওকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল—একদিন ভালো চাকরি করে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। ছাত্র আন্দোলনে গিয়েছিল, আর ফিরল না। ‘

শহীদ আয়াতুল্লাহর দাদা মরহুম আব্দুর রহিম ছিলেন কালারচান ফকির এলাকায় একজন মরমী সাধক ও ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও ত্যাগের চেতনা পরিবার থেকেই পেয়েছিলেন আয়াতুল্লাহ।
আজ সেই ত্যাগের প্রতীক হয়ে তিনি রয়ে গেছেন তাঁর গ্রামের মাটিতে। তাঁর রক্তের ঋণ ইতিহাস ভুলবে না। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—এই ত্যাগের কি যথাযথ মূল্যায়ন হবে?

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Sylheter Kotha
Theme Customized By BreakingNews