1. admin@sylheterkotha.com : admin :
  2. editor@sylheterkotha.com : editor :
December 16, 2025, 4:57 am

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনে যত বিধি-নিষেধ

  • Update Time : Tuesday, June 24, 2025
  • 189 Time View

Manual6 Ad Code

সিলেটের কথা ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য ‘অবশ্য পালনীয়’ ১৩টি নির্দেশনা জারির এক দিন পর হাওরের ওয়াচ টাওয়ার এলাকায় হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।

এ সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নানা ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেকে মনে করছেন,এখন থেকে হাউজবোট নিয়ে টাঙ্গুয়া হাওরে যেতে পারবেন না কেউ।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, টাঙ্গুয়ার হাওড়ে পর্যটকদের ভ্রমণে কোনো বাধা নেই। তবে এড়িয়ে চলতে হবে কিছু এলাকা। সোমবার (২৩ জুন) সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্বরত) মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমণে পর্যটকদের কোনো বাধা নেই। তবে ওয়াচ টাওয়ার ও আশপাশের এলাকায় হাউসবোট আপাতত যেতে পারবে না। এছাড়া পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কোনো কাজ করা যাবে না।”

এর আগে, গত ২২ জুন রাতে টাঙ্গুয়ার হাওড়ের ওয়াচ টাওয়ার এলাকায় হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন।

Manual6 Ad Code

জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্বরত) মোহাম্মদ রেজাউল করিম সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পরিবেশের ক্ষতি রোধকল্পে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার ও আশপাশের এলাকায় পর্যটকবাহী হাউজবোটের গমনাগমন পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে সবাইকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হলো।’

আদেশে আরও বলা হয়, ‘সুনামগঞ্জের সব পর্যটন স্পটে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সময় জারিকৃত নির্দেশনা আবশ্যিকভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হলো। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে শনিবার (২১ জুন) পর্যটকদের টাঙ্গুয়া হাওর ভ্রমণে ১৩টি নির্দেশনা জারি করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। ওই নির্দেশনা জারির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেছে জেলা প্রশাসন ও তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন।

Manual7 Ad Code

প্রশাসনের জারি করা পর্যটকদের বর্জনীয় নির্দেশনাগুলো হলো- উচ্চ শব্দে গান-বাজনা করা/শোনা যাবে না, হাওরের পানিতে অজৈব বা প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য/বর্জ্য ফেলা যাবে না, মাছ ধরা, শিকার বা পাখির ডিম সংগ্রহ করা যাবে না, পাখিদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে কোন ধরণের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু বা রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না, গাছ কাটা, গাছের ডাল ভাঙ্গা বা বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা যাবে না, কোর জোন বা সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না, মনুষ্য সৃষ্ট জৈব বর্জ্য হাওরে ফেলা যাবে না।

এছাড়াও পর্যটকদের আবশ্যক পালনীয় নির্দেশনাগুলো হলো- জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত নৌপথ ব্যবহার করুন, লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন, প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার হতে বিরত থাকুন, দূর থেকে পাখি ও প্রাণী পর্যবেক্ষণ করুন- ফ্ল্যাশ ছাড়া ছবি তুলুন, স্থানীয় গাইড ও পরিষেবা গ্রহণ করুন, ক্যাম্পফায়ার বা আগুন জ্বালানো থেকে বিরত থাকুন।

Manual5 Ad Code

এছাড়া গেল বুধবার (১৮ জুন) বিপর্যয় থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরকে বাঁচানোর দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয় হাওর অঞ্চলবাসীর পক্ষ থেকে। দাবিগুলো হলো- হাউসবোটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে শর্ত মেনে হাউসবোট পরিচালনা, ব্যবহৃত পলিথিন, প্লাস্টিক, বোতল প্রভৃতি পর্যটন ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত স্থানে ফেলা বা পূর্ব্যবহার করা, অনতিবিলম্বে সরকারি উদ্যোগে টাঙ্গুয়ার হাওরের জন্য সুনির্দিষ্ট দায়দায়িত্বসহ পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রকাশ ও প্রচার, জেলা প্রশাসকের সহায়তায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মনুষ্যবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মানুষের চলাচল, অবস্থান, শব্দ, আলো প্রভৃতি যাতে পাখি, মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর ক্ষতি না করে-এমন ব্যবস্থা গ্রহণ; অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে পরিবেশ দূষিত না করার নীতি অবলম্বন এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা।

প্রসঙ্গত, ৭০ বছরের ইজারাপ্রথা বাতিল করে ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে ইসিএ বা ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালে এটি ‘রামসার সাইট’ হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং ২০০১ সালে এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। এরপর এই হাওরের নিয়ন্ত্রণ নেয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

Manual6 Ad Code

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নীল জলরাশির এই হাওরের অবস্থান সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলায়। দূর থেকে তাকালেই চোখে পড়ে নীল আকাশ আর নীলাভ জলের অপূর্ব মিলন। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই হাওর যেন এক নৈসর্গিক আশ্রয়। বর্ষায় ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই হাওর পানিতে পূর্ণ হয়ে অপরূপ সৌন্দর্যে রূপ নেয়।

দেশের বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর সারাদেশে ‘মাদার ফিশারি’ হিসেবে খ্যাত। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘নয় কুড়ি বিল ছয়কুড়ি কান্দা’র জলাশয় বলে পরিচিত।

টাঙ্গুয়ায় হেমন্তে ২৪ হাজার ২৫ একর জমিতে পানি থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওর প্রায় ১৪১ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছিল। শীতকালে টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটত একসময়।টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়গুলো দেখা যায়। সেখান থেকেপ্রায় ৩০টি ছোট বড় ঝর্ণা বা ছড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে মিশেছে।

কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের ফলে সংরক্ষিত এলাকা টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ও প্রতিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পরিযায়ী পাখি, জলজ উদ্ভিদ, প্রাণীসহ জীববৈচিত্র হুমকির মধ্যে পড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Sylheter Kotha
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!