সিলেটের কথা ::: সিলেটে ভূমি জালিয়াতদের মুখোশ উন্মোচন করেছে মহানগর পুলিশ। নগরীর সাগরদিঘীর পাড়ে মৎস্য অধিদপ্তরের ১ দশমিক ১০ একর ভূমি দখলে যারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের বিস্তারিত পরিচয় ও জালিয়াতির প্রক্রিয়া সম্পর্কে এলাকাবাসী এবং গণমাধ্যমকে অবহিত করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকের সাড়ে ৫টায় সাগরদিঘীর পারে অনুষ্টিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম।
তিনি জানান, কোতোয়ালি মডেল থানার সাগরদিঘীর পাড়ের সিলেট মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার জেএল নং এসএ ৯১, বিএস স্থিত ৭৬ এর ১৬৮৭নং এসএ খতিয়ানের ৪১ নং দাগের ১ দশমিক ১০ একর ভূমি যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২৫ কোটি টাকা। এই জমির মালিক রজনী রঞ্জন গুপ্ত ও তার তিন ছেলে ১৯৪৬ সালে ভারতে চলে যান এবং তিনিসহ তার তিন ছেলে মৃত্যুবরণ করেন। এই সুযোগে প্রতারক চক্র মিথ্যা অভিযোগে একাধিক মামলা, ভূয়া দলিল, জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, একাধিক আম মোক্তারনামা তৈরি ও ভুয়া নামজারির মাধ্যমে জমিটির মালিকানা দাবি করছিল একটি প্রতারক চক্র।
এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন, সুনামগঞ্জ সদর থানার গৌররাং ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের মৃত সুনাতন দাস তালুকদার ও মৃত দিনমনি বালা দাস তালুকদারের ছেলে শশাংক দাস তালুকদার (৫৫), সিলেট শহরের ভাতালিয়া এলাকার মৃত রানু কুমার দাস (২০২১ সালে মৃত), কোম্পানীগঞ্জ থানার তেলিখালবাজার সুমিতা বালা দাসের ছেলে (পিতার নাম অজ্ঞাত) লিটন দাস (৫০), কোতোয়ালী থানার আম্বরখানা লোহারপাড়া কাজী জালাল উদ্দিন আবাসিক এলাকার ২৬নং বাসার মৃত মো. মতি মিয়ার ছেলে ইকবাল মিয়া (৫২), নগরীর দর্শনদেউড়ি পায়রা ৪৩/১নং বাসার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ছমিরুন নেছা, জালালাবাদ থানার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের সাদিপুর সোনাতলা গ্রামের মৃত মীর বক্স ও লবজান বিবির ছেলে আনোয়ার হোসেন, বিশ্বনাথের সরুয়ালা গ্রামের মো. আব্দুল মতিন চৌধুরী ও ফায়ারুন নেছা চৌধুরী মো. সামরান হোসেন চৌধুরী, নগরীর মিরাবাজার চান্দানীটুলার উদ্দীপন ২৪/৯নং বাসার মরহুম ছিদ্দেক আলী ও মোছা. জাহানারা ছিদ্দিকার ছেলে মো. আশরাফ উজ-জামান আইজাক, ঘাসিটুলা সবুজসেনা আবাসিক এলাকা সি ব্লকের আব্দুল লতিফ ও বেগম নূরজাহানের ছেলে অ্যাডভোকেট মনজুর আহমদ, বালাগঞ্জের আদিত্যপুর গ্রামের মৃত লোকেশ বৈদ্যর ছেলে কৃপাশ বৈদ্য ও জিতেন্দ্র লাল দেবের ছেলে দিলীপ দেব।
এসএমপি কমিশনার জানান, হিমাংশু কুমার গুপ্ত জালিয়াতি করে যে পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন ওই ঠিকানায় এ নামের কেনো ব্যক্তিতো নাই-ই, এমনকি উমেরগাঁও নামে সুনামগঞ্জ সদর থানায় কোনো গ্রামই নেই।
তিনি আরও জানান, এই জালিয়াত চক্রের অন্যতম সদস্য শশাংক দাস তালুকদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়ে এই জালিয়াত চক্রের পরিচয় প্রকাশ করেছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ এবং সাগরদিঘীরপাড় এলাকার সর্বস্থরের জনসাধারণ।
এসময় এসএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply