সিলেটের কথা ::: ৬ সেপ্টেম্বর (ডায়াবেটিক সেবা দিবস) বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের স্মরণে এ দিবস পালিত হয়, যিনি ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো তাঁর অবদানকে স্মরণ করা, জনগণকে ডায়াবেটিস প্রতিরে াধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতন করা এবং সেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা। আরও গুরুত্ব হলো ডায়াবেটিস নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যশিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া, বিনামূল্যে পরীক্ষা ও পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা এবং সমাজে সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করা। এভাবে দিবসটি শুধু একজন মহৎ ব্যক্তিত্বকে সম্মানই জানায় না, বরং জাতিকে সুস্থ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ঘোষিত ডায়াবেটিক সেবা দিবস উপলক্ষে সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ শিব্বির আহমদ শিবলী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
বেলা ১২টায় সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির সভাকক্ষে সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ শিব্বির আহমদ শিবলী’র সভাপতিত্বে ও সিলেট ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো: আব্দুল মোক্তাদির কোরেশী’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভার শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিলেট কালেক্টরেট মসজিদের পেশ ইমাম হাফিজ মৌলানা মোঃ শাহ আলম।
সমিতির কার্যকরি কমিটির সম্মানিত জীবন সদস্য ও কলামিষ্ট সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, যাদের ডায়াবেটিস হয়ে গেছে, তারা আতংকিত হবেন না, কারণ ডায়াবেটিস কোন হুমকিস্বরূপ ছোঁয়াচে বা মহামারী রোগ নয়, নিয়মশৃংখলা মেনে, নিয়মিত ব্যায়াম ও ওষুধের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে আজীবন সুস্থ্য জীবন যাপন সম্ভব। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা শরীরে বহু বছর থাকলেও বুঝা যায় না; কিন্তু তা দেহের স্তরে স্তরে আক্রমন করে শরীরকে নষ্ট করার কাজে নীরবে রত থাকে। ফলে মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হয়। আমরা যদি রোগের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি তা হলে যেকোন রোগকে প্রতিহত করা কোন ব্যাপারই নয়।
সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শিবব্রত ভৌমিক চন্দন বলেন, উরংপরঢ়ষরহব, উরবঃ ও উৎঁম এই ৩টি জিনিস ঠিক রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব যা আমাদের শ্রদ্ধেয় জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহিম নির্ণয় করে গেছেন। রক্তে সুগারের পরিমান বেড়ে যাওয়া মানেই ডায়াবেটিস। তাই আমাদের শপথ নেওয়া উচিত, নিয়ম-শৃংখলা মাফিক জীবন যাপন, পরিমিত আহার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম করন অর্থাৎ যেভাবেই হোক রক্তের সুগারকে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখবো। রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রন মানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন মানে সুস্থ জীবন যাপন। পরিমিত আহার গ্রহণ ও ব্যায়াম করার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারলে ডাঃ ইব্রাহিমের আত্মা শান্তি পাবে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট ডা: এ.টি.এম. জাফর আহমেদ ও ধন্যবাদ বক্তব্য প্রদান করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিহারেন্দু দাস। উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কার্মচারী, আগত রোগীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে ডাঃ ইব্রাহিম বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন সিলেট কালেক্টরেট মসজিদের পেশ ইমাম হাফিজ মৌলানা মোঃ শাহ আলম ।
এছাড়াও ডায়াবেটিক সেবা দিবসের কর্মসূচী হিসেবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আগত রোগীদের বিনামূল্যে ডায়াবেটিস সনাক্ত করা হয়। জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৬তম মৃত্যু বার্ষিকী ও ডায়াবেটিস সেবা দিবস উপলক্ষ্যে সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত বিনামূল্যে ডায়াবেটিক সনাক্তকরণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও কলামিষ্ট সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী। বিজ্ঞপ্তি
Leave a Reply