1. admin@sylheterkotha.com : admin :
August 6, 2025, 7:23 am
Title :
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনে প্রস্তুত ইসি : কমিশনার মাছউদ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য সিইসিকে চিঠি দেব: প্রধান উপদেষ্টা সংবিধানের তফসিলে থাকবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ গণঅভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, এবার দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে: ফখরুল ইসলাম জুলাই অভ্যুত্থানের একবছর: কারো মতে ‘ভালো আছে দেশ’, হতাশও অনেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ মো. মোস্তাক আহমদের কবরে জালালাবাদ গ্যাস অফিসের শ্রদ্ধা নিবেদন ৫ আগস্ট’ হয়ে উঠুক গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অঙ্গীকারের দিন – আব্দুল হাকিম চৌধুরী গোয়াইনঘাটে জাফলংয়ে চা বাগান থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার- আটক ৩ মধ্যনগরে বিএনপির বিজয় মিছিল ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের নায়কেরা-‘ছাত্র আন্দোলনে গিয়েছিল, আর ফিরল না। ‘গুলিবর্ষণে ভাই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান আয়াতুল্লাহ

জুলাই ঘটনাপ্রবাহ-৩৬ দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন

  • Update Time : Tuesday, August 5, 2025
  • 4 Time View

সিলেটের কথা ::: চব্বিশের ৩৬ জুলাই অর্থাৎ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশ। হাসিনার অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শত শত মানুষ নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন।

আজ মঙ্গলবার দেশের জনগণের বিজয়ের দিন। এদিন গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ শাসনামলে অহংকার করে বলে এসেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা পালায় না’।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়েছিল চব্বিশের ১ জুলাই। অহিংস এ আন্দোলন সহিংস হয় ১৫ জুলাই থেকে।

৫ আগস্ট, সোমবার : কড়াকড়ি কারফিউ উপেক্ষা করে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি সফল করতে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা করে। দেশজুড়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করার পর জনতার উল্লাসে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে চারদিক। এক মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতার আধিপত্য এবং আওয়ামী লীগের কথিত রাজনৈতিক দুর্গ। শেখ হাসিনা হঠাৎ দেশত্যাগ করার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীসহ সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে অনেক মানুষ নিহত ও আহত হন। রাজধানীর রাজপথ দখলে নেয় স্বৈরাচার হঠানোর আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা। তাদের মধ্যে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করে বিজয় উদযাপন করে। শুধু গণভবন নয়, শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর অসংখ্য মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জাতীয় সংসদেও প্রবেশ করে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী-সবাই রাজপথে নেমে দীর্ঘদিনের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের পতন উদযাপন করে।

৪ আগস্ট, রোববার : চব্বিশের ৩৫ জুলাই অর্থাৎ ৪ আগস্ট (রোববার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়ে ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে সারা দেশে কমপক্ষে ১১৪ জন নিহত হন।

৩ আগস্ট, শনিবার : সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জমায়েত হয় শিক্ষার্থীসহ হাজারো জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাজধানীসহ দেশের ৩৩টি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ হয়।

২ আগস্ট, শুক্রবার : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুমার নামাজের পর ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালিত হয় ২৮ জেলায়। একই সঙ্গে পালন করা হয় শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের ‘দ্রোহযাত্রা’ কর্মসূচি। শিল্পীসমাজের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদে শামিল হন সর্বস্তরের মানুষ।

১ আগস্ট, বৃহস্পতিবার : ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুপুর দেড়টার একটু পরেই তারা ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের একটি গাড়িতে বেরিয়ে আসেন। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

৩১ জুলাই, বুধবার : ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির পর বৃহস্পতিবারের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ দিনের কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’।

৩০ জুলাই, মঙ্গলবার : আন্দোলনে ছাত্র-জনতার হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিল করা হয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিবৃতিতে স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল লাল রঙের ফ্রেমে রাঙিয়ে দেন অনেকে। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

২৯ জুলাই, সোমবার : জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয় ১৪ দলের বৈঠকে। ৬ সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। ‘জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না’-এক শুনানিতে এ মন্তব্য করে হাইকোর্ট।

২৮ জুলাই, রোববার : চব্বিশের ২৮ জুলাই রোববার সারা দেশে গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন এবং অনলাইন-অফলাইনে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করে। এদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতিতে ফুটিয়ে তোলা হয় অগ্নিঝরা প্রতিবাদ। তবে রাজধানীতে দেয়াল লিখনের সময় পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, সংঘাত, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকে। সবমিলিয়ে রোববার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে গ্রেফতার হন ১০ হাজার ২৮ জন। রাজধানীতে সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনায় আরও ২২টি মামলা হয়। এ নিয়ে রাজধানীতে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ২২৯ এবং গ্রেফতার সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৬৪ জনে। রাজধানীর পলাশীতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতি কর্মসূচি পালন করেন কার্টুনিস্ট এবং চারুকলার শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশি বাধায় তাদের ওই কর্মসূচি আর শেষ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পুলিশ তাদের রংতুলি জব্দ করে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতি করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিবির হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা বলেন। মোবাইল ইন্টারনেট ১০ দিন পর সচল হয়।

২৭ জুলাই, শনিবার : কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

২৬ জুলাই, শুক্রবার : এলাকা ভাগ করে চলে ‘ব্লক রেইড’। অভিযান শুরু হয় সারা দেশে। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলা হয়। নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ডিবি। অন্য দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার। সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার পর ১৯ জুলাই মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া থেকে নাহিদকে তুলে নেওয়া হয়।

২৫ জুলাই, বৃহস্পতিবার : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় সারা দেশে চলে গণগ্রেফতার। গত ৯ দিনে (১৭ থেকে ২৫ জুলাই) সারা দেশে কমপক্ষে ৫ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীতে ২ হাজার ২০৯ জন, চট্টগ্রামে ৭৩৫ জন, বরিশালে ১০২ জন, নরসিংদীতে ১৫৩ জন ও সিলেটে ১২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

২০২৪ সালের ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার সারা দেশে ১২৮ মামলায় ৪৫১ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। রাজধানী ঢাকায় সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় মহানগরের বিভিন্ন থানায় ২০১টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় ২৫ জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ২০৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর মেট্রো স্টেশন পরিদর্শন। বলেন, ‘আমি জনগণের কাছে বিচার চাইছি।’

২৪ জুলাই, বুধবার : কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া যায়।

২৩ জুলাই, মঙ্গলবার : কোটা প্রথা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি। রাতে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়।

২২ জুলাই, সোমবার : কোটা প্রথা সংস্কার করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তৈরি করা প্রজ্ঞাপনে অনুমোদন দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২১ জুলাই, রোববার : সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগকে অনতিবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কোটা প্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

২০ জুলাই, শনিবার : দেশজুড়ে কারফিউ, সেনা মোতায়েন। সাধারণ ছুটি ঘোষণা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া ও গুলি করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আট দফা দাবি পেশ করেন।

১৯ জুলাই, শুক্রবার : কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকা ছিল কার্যত অচল, পরিস্থিতি ছিল থমথমে। আন্দোলনকারীরা জানান, ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে। রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি, সেনাবাহিনী মোতায়েন। ইন্টারনেট-সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়।

১৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার : আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশ ছিল প্রায় অচল। সারা দেশে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

১৭ জুলাই, বুধবার : এদিন চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশে নিহতদের মাগফেরাত কামনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে গায়েবানা জানাজা আদায় করেন আন্দোলনকারীরা।

ভোরে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তাড়িয়ে দেয় এবং ক্যাম্পাসকে ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা করে। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দেয়। সরকার কোম্পানিগুলোকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। ১৭ জুলাই পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিনেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিল এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।

১৬ জুলাই, মঙ্গলবার : রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের বুলেটে নিহত হওয়ার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সারা দেশে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ। বিকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আন্দোলন যাবে, আন্দোলন আসবে। কিন্তু ছাত্রলীগ থাকবে। সবকিছুই মনে রাখা হবে এবং জবাব দেওয়া হবে। একটি ঘটনাও জবাব ছাড়া যাবে না।’

১৫ জুলাই, সোমবার : কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাদের শেষ দেখিয়ে ছাড়বেন বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

১৪ জুলাই, রোববার : গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ‘কোটা বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।’ শেখ হাসিনা আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তা হলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে?’ একই দিনে পদযাত্রা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডের কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন।

১৩ জুলাই, শনিবার : সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। পরের দিন রোববার গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতি বরাবর এ স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা পরিস্থিতিকে সহিংস করে তোলে।

১২ জুলাই, শুক্রবার : কোটা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার ছুটির দিনেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছেন। এটি অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ বেআইনি। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, শিক্ষার্থীরা ‘লিমিট ক্রস’ করে যাচ্ছেন।

১০ জুলাই, বুধবার : সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম, রাস্তায় সেøাগান দিয়ে রায় পরিবর্তন হয় না। এটি আজকে না, আমি যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ছিলাম, তখন একটি মামলায় বলেছিলাম, রাস্তায় সেøাগান দিয়ে রায় পরিবর্তন করা যায় না। এটি সঠিক পদক্ষেপ না।’

৯ জুলাই, মঙ্গলবার : হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা চার ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে পরদিন সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

৮ জুলাই, সোমবার : ঢাকার ১১টি স্থানে অবরোধ, ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, ৩টি স্থানে রেলপথ অবরোধ এবং ৬টি মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে সংসদে আইন পাসের দাবি ওঠে।

৭ জুলাই, রোববার : বাংলা ব্লকেডে স্থবির হয় রাজধানী। অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

৬ জুলাই, শনিবার : দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের দিনের মতোই বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ছাত্র ধর্মঘট এবং সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের ডাক দেন। এর নাম দেওয়া হয় ‘বাংলা ব্লকেড’।

৫ জুলাই, শুক্রবার : ছুটির দিন শুক্রবারও বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। চট্টগ্রাম, খুলনা ও গোপালগঞ্জে সড়ক অবরোধ করা হয়।

৪ জুলাই, বৃহস্পতিবার : সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগে স্থগিত হওয়ার কথা থাকলেও তা এদিন হয়নি। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ‘নট টুডে’ বলে আদেশ দেন। শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধ করে। আর ঢাকায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে পাঁচ ঘণ্টা।

৩ জুলাই, বুধবার : এদিন আন্দোলনকারীরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দেড় ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন। একই দাবিতে আরও ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।

২ জুলাই, মঙ্গলবার : আন্দোলনকারীরা এদিন দুপুর পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল করে নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও বাটা সিগন্যাল মোড় ঘুরে শাহবাগে গিয়ে থামেন। সেখানে তারা এক ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

১ জুলাই, সোমবার : কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ছাত্রসমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

৯ জুন, ২০২৪, শুক্রবার : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।

৬ জুন, ২০২৪, মঙ্গলবার : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) পুনর্বহালে আদালতের দেওয়া রায় বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ।

৫ জুন, ২০২৪, সোমবার : সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Sylheter Kotha
Theme Customized By BreakingNews