সিলেটের কথা ডেস্ক ::: গত ১৩ জুলাই রবিবার রাত আনুমানিক ৯ঘটিকায় বিয়ানীবাজারের মাথিউরা দুধবখশী এলাকায় ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রদল কর্মী ও তরুণ সমাজসেবক বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী সুলতান আহমদের পিতা মোঃ মঈন উদ্দিন(৭৫) প্রতিদিনের মতো সেদিনও বাজার করে নিজ বাড়ির পথে ফিরছিলেন।
হঠাৎ কয়েকজন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে এবং মুহূর্তের মধ্যে দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে অপ্রস্তুত অবস্থায় এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট—প্রাণনাশের চেষ্টা। প্রতিটি আঘাতে হামলাকারীদের হিংস্রতা ও ঘৃণা ফুটে ওঠে। আহতের আর্তচিৎকার শুনে স্থানীয় কয়েকজন দ্রুত এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়, আর নীরব রাত মুহূর্তেই ভরে ওঠে আতঙ্ক ও রক্তের গন্ধে।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকলেও রুগির অবস্থা আশংকাজনক, পরিবারের লোকদের জিজ্ঞেস করলে জানা যায় আজ ১৫ই জুলাই মঙ্গলবার রুগীকে নিয়ে সিলেট প্রাইভেট চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন, উনার পরিবার অর্থাৎ সুলতানের মা হেনা বেগম(৫০)কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন উনার স্বামী দীর্ঘদিন থেকে হৃদরোগে ভোগছেন এবং পূর্বে কয়েকদফা হার্টঅ্যাটাকও করেছেন। কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং আরও বলেন উনার ছেলে সুলতানকে দেশে ফিরা মাত্রই নাকি জানে মেরে ফেলবে এরকম প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে এবং তারা বার বার হুমকির স্বীকার হচ্ছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে রূগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
ঘটনার পর এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত শত্রুতা বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এ হামলার পেছনে রয়েছে।
আহত মোঃ মঈন উদ্দিন দুঃখভারাক্রান্ত কন্ঠে বলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে সৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের লোক বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের দুইজন তাকে অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে দুই দফা হুমকি দিয়েছিল। হামলার সময় সন্ত্রাসীদের মুখ বাঁধা থাকায় চেনা সম্ভব হয়নি, তবে তার দৃঢ় সন্দেহ—তার পূর্বের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঈন অ্যান্ড সন্স, যেটি উনার ছেলে লন্ডনে যাওয়ার পর চাঁদা দাবী করে , চাঁদা না পেয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং যাদের কাছ থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে হুমকি পাচ্ছেন, তারাই এ হামলার সাথে জড়িত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পূর্বে এদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশ তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং আসামিরা এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
ঘটনার পরদিন ১৪ জুলাই সোমবার দুপুরে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদল বিয়ানীবাজার পৌরশহর এবং কলেজ ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল বের করে।
এদিকে, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার (হাজি দিনার) আহতকে দেখতে উনার বাড়িতে যান এবং খোঁজখবর নেন।
বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান চালানোর আশ্বাস দিয়েছে।
Leave a Reply