আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::: গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরাইল। একের পর এক হামলা চালিয়ে মুসলিম দেশগুলোর ঘুম হারাম করে দিয়েছে। আকস্মিক কাতারে হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশটি। এবার আরেক মুসলিম দেশে হামলার পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল। সংবাদমাধ্যম ‘হারেৎস’ জানিয়েছে, দোহায় অভিযান শেষ হতেই এবার আরেক দেশের দিকে অস্ত্র তাক করছে তেলআবিব। এই আশঙ্কা আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে এক নতুন অগ্নিঝড়ের জন্ম দিতে পারে।
দোহায় ইসরাইলি আক্রমণের প্রতিক্রিয়া এখনো চলমান। ঠিক সেই সময়েই আরেকটি বড় আশঙ্কা উঠে এসেছে। এবার ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু তুরস্ক। মূলত ২০২৩ সালে গাজা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। ২০২৫ সালের আগস্টে চূড়ান্ত রূপ নেয়। তখন আঙ্কারা তাদের আকাশসীমায় ইসরাইলি বিমানকে নিষিদ্ধ করে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান প্রকাশ্যে ইসরাইলকে গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।
সর্বশেষ কাতারে ইসরাইলি আক্রমণের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান কঠোর ভাষায় নিন্দা জানান। এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন।
তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তুরস্ক সবসময় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকবে। যেকোনো তুর্কি ভূখণ্ডে ইসরাইলি আক্রমণ সরাসরি আঙ্কারার সঙ্গে সংঘর্ষ ডেকে আনবে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এমন হুঁশিয়ারির পরেই ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেত দাবি করেছে, তুরস্ক থেকে ইসরাইলে একটি হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল, যার লক্ষ্য ছিলেন বিতর্কিত ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির। আঙ্কারা এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করেছে। এই ঘটনার অজুহাতে ইসরাইল তুরস্কের অভ্যন্তরে হামাসের কার্যক্রমকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। ইস্তাম্বুলকে হামাসের আর্থিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করছে, এমনকি হামাসকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার জন্য এরদোয়ানকে অভিযুক্ত করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাতারের সঙ্গে তুরস্কের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। তুরস্ক শুধু একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, ন্যাটো-র দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী তাদের হাতে। সিরিয়া, লিবিয়া থেকে শুরু করে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে এরদোয়ানের প্রভাব সুদৃঢ়। ইসরায়েল যদি আঙ্কারার ওপর সরাসরি আক্রমণ চালায়, তবে তা সীমিত সংঘাত থেকে পূর্ণমাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
তুরস্ককে আঘাত করা মানে ইসরাইলের জন্য কৌশলগতভাবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। যদি আঙ্কারার আকাশে যুদ্ধের আগুন জ্বলে ওঠে, তা শুধু ইসরাইল-তুরস্ক দ্বন্দ্বে সীমাবদ্ধ থাকবে না, এতে ন্যাটোসহ গোটা ইউরোপও জড়িয়ে পড়বে, যা এক নতুন আঞ্চলিক মহাযুদ্ধের জন্ম দিতে পারে।
Leave a Reply