সিলেটের কথা ডেস্ক :: সিলেটে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। ইতোমধ্যে ৪ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাকে রাখা হয়েছে হাসপাতারের আইসিইউ বিভাগে। সময়ের সাথে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুটি আরটি-পিসিআর ল্যাব।
সিলেটে গত কয়েকদিনে সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৪ জন। এর মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি এক রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত হয়েছে। তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আক্রান্ত চার জনের মধ্যে একজন বেসরকারি হাসপাতালে ও তিনজন শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সিলেটে করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ বার বার সতর্ক করলেও তা আমলে নিচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সতর্কতা ছাড়াই তারা রাস্তাঘাটে চলাচল করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মাস্ক পরিধানের জন্য পরামর্শ দিলেও তা মানছেন না কেউই। ফলে অসচেতনতার কারণে সিলেটে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
২০২০ সালে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের সময় সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ ঘোষনা দেওয়া হয়। ওই সময় একশ’ শয্যার হাসপাতালটি রোগীতে পূর্ণ ছিল। এবারও হাসপাতালটিকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে আইসিইউ বিভাগ। বাড়তি জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে- জানালেন হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান।
সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান জানান, শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালটি একশ’ শয্যার। কিন্তু এখনো সিলেটে করোনার সংক্রমন তেমন ভয়াবহ নয়। তাই এখনই পুরো হাসপাতালটি করোনার জন্য ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ছে না। আপাতত ৩০ শয্যার একটি ওয়ার্ড করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। রোগী বাড়লে পুরো হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা হয়েছে। তবে বিভাগের যেখানেই কোন করোনা আক্রান্ত রোগীর আইসিইউ সেবার প্রয়োজন পড়বে তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসিইউ কোডিভ ডেডিকেটেড হিসেবে ইতোমধ্যে ব্যবহার শুরু হয়েছে।
ডা. আনিসুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত সিলেটে যে ৪ জন রোগী করোনা আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন তাদের তিনজনের বাড়ি সিলেটে ও একজনের বাড়ি সুনামগঞ্জে। এর মধ্যে বয়স্ক এক পুরুষকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে বিদেশ ফেরতদের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। একই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সবকটি স্থলবন্দরেও।
২০২০ সালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটি-পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, বর্তমানে ওসমানীর ল্যাবে পরীক্ষা হচ্ছে। আর প্রস্তুত রাখা হয়েছে শাহজালাল বিশ্বদ্যালয়ের ল্যাব। সংক্রমণ বাড়লে ল্যাবটি চালু করা হবে। এছাড়া বেসরকারিভাবে এনজিও সংস্থা সীমান্তিকের ল্যাবেও কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে।
Leave a Reply