1. admin@sylheterkotha.com : admin :
October 21, 2025, 3:43 pm
Title :
সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা প্রদর্শন করে গভীর দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের দেশের সম্পদ হিসেবে তৈরি করতে হবে:উপমহাপরিচালক মোঃ জিয়াউল হাসান সিলেটে সড়কে প্রাণ গেল পুলিশ সদস্যের সিলেটের সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক ষড়যন্ত্রে শিকার, বহিষ্কারাদেশ বিবেচনার অনুরোধ সিলেট মেডিকেয়ার এবং ডিসান হাসপাতালের মতবিনিময় সিলেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে খন্দকার মুক্তাদির বন্ধ শায়েস্তাগঞ্জে বিদ্যুৎকেন্দ্র, লোডশেডিং জনজীবনে দুর্ভোগ রিক্সা শ্রমিকদের মাঝে শ্রমিক কল্যাণের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নই টেকসই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি-মিফতাহ্ সিদ্দিকী দেশ গঠনে বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর অনন্য অবদান জাতি আজ সম্মানের সাথে স্বীকৃতি দিচ্ছে -উপমহাপরিচালক জিয়াউল হাসান

সিলেটের বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ রোববার- চা বাগান শ্রমিকরা

  • Update Time : Saturday, May 3, 2025
  • 82 Time View

সিলেটের কথা :: বকেয়া প্রায় ২০ সপ্তাাহের বতন না দেয়ায় প্রায় আড়াই হাজার চা বাগানের শ্রমিক ও তাদের পরিবার সদস্যরা আগামী রোববার (৪ মে) সিলেটের বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করবেন। চা শ্রমিক ও চাবাগান রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক রঞ্জিত নায়েক রঞ্জু দ্য গণমাধ্যমকে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও, কেউ তাদের কথা রাখেনি। আমরা অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি, কিন্তু একটিও পূরণ হয়নি। তাই, আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আমরা আগামী রবিবার (৪ মে) মালনীছড়ায় সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করব।

এদিকে জসদা বাউরি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সিলেটের কালাগুল চা বাগানে কাজ করছেন।তিনি বলেন, যখন তিনি প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন, তখন তার দৈনিক মজুরি ছিল মাত্র ছয় টাকা। বছরের পর বছর ধরে, তার মজুরি এবং রেশন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তার ষাট বছরে কখনও তিনি টানা ২০ সপ্তাহ বেতন না পাওয়ার মতো সংকটের মুখোমুখি হননি।

তিনি বলেন, দুল উৎসবের জন্য আমরা কোনও বোনাস পাইনি। আমি প্রতিবাদ করেছিলাম, আশ্বাস পেয়েছিলাম কিন্তু এখন কোনও কাজ হয়নি। গতকাল মে দিবস, কিন্তু আমি আমার মজুরি বা কোনও বোনাস পাইনি।

বুরর্জান চা বাগানে আরেক শ্রমিক জোসনা বেগম বলেন, ঈদের আগে তার বকেয়া মজুরি দাবি করার জন্য তাকেও তার কর্মজীবনের শেষের দিকে রাস্তায় নামতে হয়েছিল। কেউ শোনেনি। রমজানে আমার মজুরি না পেয়ে আমি সঠিকভাবে ইফতারও দিতে পারিনি। ঈদুল আজহা আবার ঘনিয়ে আসছে। গত ঈদে আমরা কিছুই কিনতে পারিনি। আমি আমার বাচ্চাদের সামনে যেতে পারিনি শরমে ও অভাবের কারণে।আমি আজ হতাশায় আছি। যদি সরকার বা মালিকপক্ষ আমাদের এভাবে মারতে চান, তাহলে এখনই এটি করুন। আমরা খাবার ছাড়া বাঁচতে পারব না। আমরা আর কতক্ষণ সহ্য করবো?

সিলেটের বুরজান চা-কোম্পানির অধীন তিনটি চা বাগান বুরজান, ছড়াগাঙ, কালাগুল ও বুরজান কারখানার শ্রমিকদের ২০ সপ্তাহের বকেয়া এবং রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শ্রমিকেরা।

সম্প্রতি নগরীর লাক্কাতুরা এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে বন্দরবাজারের সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন চা শ্রমিকেরা। কর্মসূচি চলাকালে শ্রমিক জ্যোৎসা বেগম তার ক্ষোভের কথা বলেন।

এ সময় ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও লড়াই কর’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘আমাদের বেতন দিতে হবে, দিয়ে দাও’, ‘বকেয়া বোনাস পরিশোধ করতে হবে’, ‘বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে’, ‘আমাদের বেতন দিয়ে দাও, দিতে হবে’- এসব স্লোগানে-স্লোগানে চারপাশ মুখরিত করে চা শ্রমিকেরা।

শ্রমিকরা বলেন, বেতন ও রেশন না পাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তারা। বুরজান চা-কোম্পানির অধীনে থাকা আড়াই হাজার শ্রমিকের বেতন-রেশন ও বোনাস বকেয়া পড়েছে। তাদের ছেলে-মেয়েরা তিন বেলা খাবার খেতে পারছে না। পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। মলিকপক্ষ বেতন দিচ্ছে-দিচ্ছে বলে যাচ্ছে। কবে তাদের বেতন দেবে তার ঠিক নেই।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ২,৬০০ শ্রমিকের মধ্যে খাদ্য ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয় এবং চা বোর্ডের সাথে শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের বিষয়ে কথা বলেছি।”

বুর্জান চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, “আমরা কৃষি ব্যাংককে আমাদের ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করব। আমরা আশা করি শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

তিনি বলেন, কেবল শ্রমিকরা নয়, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও তাদের বেতন পাননি, কারণ বাগানগুলি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কালাগুলের চা শ্রমিক নেতা সোহাগ ছত্রী বলেন, “আমরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করি, তবুও আমরা ২০ সপ্তাহ ধরে আমাদের বেতন পাইনি। আমাদের বারবার বলা হচ্ছে যে আমাদের ‘আজ অথবা কাল’ বেতন দেওয়া হবে, কিন্তু তা কখনও হয় না। আমরা যখন অনাহারে থাকি তখন বাগান মালিকরা বিদেশে ভ্রমণ করেন।”

সরকার মনোযোগ দিচ্ছে না। দয়া করে আমাদের পাওনা পেতে সাহায্য করুন যাতে আমরা কাজে ফিরে যেতে পারি। “আমাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না। আমরা আমাদের সন্তানদেরও দেখাশোনা করতে পারছি না,” তিনি বলেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা সঞ্জয় কান্ত দাস বলেন, “গত প্রায় ২০সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন পাচ্ছেন না কালাগুল,বুরজানসহ ৪টি বাগানের শ্রমিকরা। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন,কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা করছেন না। এই চা বাগানের শ্রমিকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আগামী ৪মে বকেয়া মজুরি-রেশনের দাবিতে রাজপথে অবস্থান নেবেন। রাজপথ ছাড়া তাদের আর কোন বিকল্প পথ নেই। প্রাপ্য মজুরি-রেশন আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা এখন রাজপথেই থাকবেন। সরকার ও প্রশাসন শ্রমিকদের এই দিকে ঠেলে দিয়েছেন।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!