গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি ::: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৮নং তোয়াকুল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পেকেরখাল গ্রামে ইয়াকুব আলীর ছেলে এবং তোয়াকুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন বিগত সরকারের আমলে জোর পূর্বক ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত গ্রামবাসীর যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার উপর বসতঘর, বাথরুম ও টিউবওয়েল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আজির উদ্দিন ও আলাউদ্দিন জোরপূর্বক ভাবে রাস্তার উপর বসতঘর নির্মাণ করেছেন। এতে পেকেরখাল গ্রামের ২০-২৫ টি পরিবার দীর্ঘদিন থেকে রাস্তা বঞ্চিত রয়েছেন। রাস্তা উদ্ধারে গ্রামবাসীর পক্ষে মৃত আব্দুর রকিবের পুত্র দেলোয়ার হোসেন ২০২৩ সালে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিত ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাসে মহামান্য আদালত নির্মানাধীন বসতঘর, বাথরুম ও টিউবওয়েল উচ্ছেদ করে রাস্তা উদ্ধাররের জন্য সহকারী কমিশনার ভুমি গোয়াইনঘাটকে নির্দেশনা দেন। আদলতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার ভুমি গোয়াইনঘাট, সার্ভেয়ারকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঐ রাস্তা সার্ভে করে সীমানা নির্ধারণ করেন। কিন্তু দখলকারীরা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অদ্যবধি পর্যন্ত স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়নি। এদিকে দেলোয়ার হোসেন পূণরায় সিলেটের সাবেক জেলা প্রশাসকের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলে জেলা প্রশাসক দ্রুত স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তা উদ্ধারের জন্য ইউএনও গোয়াইনঘাট ও সহকারী কমিশনার ভুমি গোয়াইনঘাটকে নির্দেশনা দিলেও অজ্ঞাত কারণে ৬/৭ মাস অতিবাহিত হলেও কাযর্করী কোন প্রদক্ষেপ বাস্তবায়ন হয়নি।
অপরদিকে একই গ্রামের মৃত আব্দুর রকিবের পুত্র সৌদি প্রবাসী আলী হোসেন বাদী হয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তা উদ্ধারের জন্য লিখিত আবেদন করেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়ক থেকে পেকেরখাল গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিকের বাড়ি পর্যন্ত ১নং খাস খতিয়ানের ২০ফুট প্রসস্ত একটি রাস্তা যায়। পথিমধ্যে একই গ্রামের ইয়াকুব আলীর পুত্র তোয়াকুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন সরকার দলের প্রভাব বিস্তার করে রাস্তার উপর বসতঘর, বাথরুম ও টিউবওয়েল স্থাপন করেন এবং রাস্তার শেষ প্রান্তে মৃত আব্দুল হামিদের পুত্র আজির উদ্দিন ও আলাউদ্দিন আরেকটি বসতঘর নির্মাণ করেন। এতে পেকেরখাল গ্রামের ২০-২৫ টি পরিবারের প্রায় ২শতাধিক লোকজন স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ও হাটবাজারে যাতায়াত করতে বিঘ্ন ঘটেছে। অত্যান্ত কষ্ট করে যাতায়াত করছেন এসব লোকজন।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের জানান, আমি বসতঘর, বাথরুম ও টিউবওয়েল নির্মাণ করেছি। এসিল্যান্ড এসে মাপযুগ করে আমাকে স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করার জন্য বলেছেন, ইউএনও গোয়াইনঘাট আমাকে ডেকে নিয়ে স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য বলেছেন। কেন উচ্ছেদ করননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেষ প্রান্তে আজির উদ্দিন ও আলাউদ্দিন তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করলে আমিও উচ্ছেদ করব।
অভিযুক্ত আজির উদ্দিন জানান, সার্ভে করার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমি আপত্তি জানিয়েছি এবং পূর্ণ সার্ভের জন্য এসিল্যান্ড বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওমর ফারুক জানান, এ বিষয়ে আমার জানা আছে। দু-একদিনের মধ্যে লোক পাটিয়ে ব্যবস্থা নেব।
সিলেটের জেলা প্রশাসক জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply